অসুখ বিসুখে অনেকেরই সার্জারির নাম শুনলে, ভয়ে বুক শুকিয়ে যায়। কিন্তু কিছু অসুখের বাড়াবাড়ি মানুষকে সার্জারি করাতে বাধ্য করে যেমন হার্টের অসুখে বাইপাস সার্জারি। আজ আমরা বাইপাস নিয়ে আলোচনা করব।
বাইপাস সার্জারি মানেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে শরীরে বিস্তর কাঁটাছেড়া,শরীরে অসংখ্য দাগ। সার্জারির পর রুগীর বেশ সময় লাগে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে। রুগীদের কষ্ট লাঘব করতে বিশ্ব জুড়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা প্রতিদিন যুগান্তকারী সব সার্জারির পথ আবিষ্কার করছেন এমনই এক আবিষ্কার হল মাত্র চার ইঞ্চি কেটে হার্টের বাইপাস সার্জারি।
পৃথিবীজুড়ে বর্তমানে হার্টের অসুকের বাড়বাড়ন্ত।আগের থেকে মানুষের মধ্যে কিছুটা সচেতনতা এলেও, পুরোপুরি আসেনি।পরিবারে কারোর হার্টের অসুক ধরা পড়লে দিশাহারা হয়ে পড়ে। তবে আমরা নিশ্চিন্ত, কারন করনারি আর্টরি ডিজিজে বিশ্বের যেকোনো দেশের হাসপাতালের সঙ্গে আমরা অনায়াসে পাল্লাদিতে পারি।এরকই এক নতুন চিকিৎসা পদ্ধিতি হল ‘‘মিনিম্যলি ইনভেসিভ কারডিওথোরাসিস সার্জারি’এমআইসিএস’।হার্টের রক্তবাহি ধমনীতে চর্বির আস্তরণ বেড়েগিয়ে অক্সিজেনযুক্ত রক্তের অভাবে হার্ট ধুঁকতে থাকে।পরিশ্রম করলে নিস্বাসে কষ্ট, বুকে ব্যাথা-এগুলোই হার্টের অসুকের উপসর্গ। চর্বির আস্তরনে সংকীর্ণ হয়ে যাওয়া ধমনীতে রক্তের ডেলা আটকে গিয়ে রক্ত চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়ে হার্ট অ্যাটাক হয়।
হার্টে রক্তের যোগানদায়ী ধমনি খুব বেশী সংকীর্ণ অবস্তা এবং একসঙ্গে অনেক গুলি ধমনির একই হাল হোলে বাইপাস সার্জারি ছাড়া উপায় থাকে না।প্রচলিত পদ্ধতিতে বুকের মাঝখানের হাড় স্টারনাম কেটে বাইপাস সার্জারি হয়।হাড় কাটার ব্যাথা সহ আরও অনেক সমস্যার সম্মুখীন হন রুগিরা এই পদ্ধতিতে সার্জারি হোলে।পাঁজরের হাড় কেটে স্টারনাম পদ্ধতিতে সার্জারি হোলে রুগির স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে দীর্ঘ সময় লাগে। সংক্রমনের সম্ভাবনাও থাকে। দীর্ঘদিন ফিজিওথেরাপি করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে হয়। রুগির কষ্ট কমাতে ও দ্রুত সুস্থ করতে প্রতিদিন চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা লড়ছেন,শুরু হল নতুন পদ্ধতি বিটিং হার্ট বাইপাস সার্জারি অর্থাৎ হার্টকে না থামিয়ে সার্জারি। থেমে নেই চিকিৎসকরা শুরু করলেন আরও এক নতুন সার্জারি ‘মিনিম্যালি ইনভেসিভ কারডিওথোরাসিস সারজারি(এমআইসিএস)’।পাঁজরের দুটি হাড়ের মাঝখানে অল্প কেটে ম্যামরি আটারির সাহায্যে বাইপাস সার্জারি।এই পদ্ধতিতে সার্জারির সাফল্যের হার ১০০% কাছাকাছি।কিন্তু ‘এমআইসিএস’ সার্জারির জন্য হাসপাতালের উপযুক্ত পরিকাঠাম চাই।
‘এমআইসিএস’ বাইপাস সার্জারি অত্যাধুনিক যন্ত্রপাটি ও অ্যাডভান্স টেকনিকের সাহায্যে করা হয় বলে প্রচলিত বাইপাস সার্জারির তুলনায় অনেক বেশী নিরাপদ। বুকের হাড় কাটা হয়না বলে রুগীর ব্যাথা কম হয়,রক্তপাতের চান্স থাকে না।ডায়বিটিশ রুগীদের জন্য এই পদ্ধিতির সার্জারি অত্যন্ত কার্যকরী কারন সংক্রমনের শূন্য সম্ভবনা থাকে।ফুসফুসেও সংক্রমনের চান্স থাকে না।তাই যাদের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কম তাদের জন্য মিনি বাইপাস সার্জারি দারুন কার্যকরী।মাত্র চার ইঞ্চি কাটা হয় বলে বোঝাই যায় না বাইপাস সার্জারি হয়েছে বলে।কম কাটা,নামমাত্র রক্তপাত এবং সংক্রমনের চান্সবিহিন বলে মাত্র এক সপ্তাহে রুগী স্বাভাবিক জীবনে ফেরত আশে। পোস্ট অপারেসানের জটিলতাও হয় না।ভবিষ্যতে রোবোটের সাহায্যে এই সার্জারি করার কথা ভাবছে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা।আরও একধাপ এগিয়ে কেউ কেউ ভাবছে—’পারকিউটেনিয়াস টেকনোলজির’ সাহায্যে নিয়ে বিনা কাটা ছেঁড়ায় সার্জারি করবে। মানুষের গড় আয়ু কেন বেড়েছে এবার বোধহয় বোঝা যাচ্ছে।
এমন সার্জারি কোন হাসপাতালে হয় জানালে ভালো হতো।
অ্যাপোলো গ্লেনেগালস হাসপাতালে যোগাযোগ করুন।
ধন্যবাদ
একবিংশ।