যারা বাতের রুগি, তারা অন্য ঋতুর তুলনায় বিশেষত শীতকালে বাতের ব্যাথায় বেশি কষ্ট পান। এ বছর শীতের শুরুয়াত মোটামুটি শুরু হয়ে গেছে। তাপমাত্রা কালীপূজোর পর থেকে ২৩ থেকে ২৫ ডিগ্রির মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। আজ আমরা বাতের ব্যাথা উপশমে আয়ুর্বেদ তেলের ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করবো।
আমাদের শৈশবকালে গায়ে ব্যাথা বেদনা হলে মা-ঠাকুমারা ব্যাথার স্থানে রসুন তেল লাগিয়ে দিতেন। ম্যাজিকের মতো কাজে দিত। তেমনই, প্রকৃতির বহু ভেষজের তেল নিষ্কাশন করে অথবা ভেষজের সঙ্গে তেল মিশ্রণ করে চিকিৎসা পুরাকাল থেকে চলে আসছে।
আয়ুর্বেদ শাস্ত্র এরকম মোট ৮০ রকমের বাতব্যাধির বর্ণনা করেছে। চরকসংহিতা, অষ্টাঙ্গ সংগ্রহ, অষ্টাঙ্গ হৃদয় প্রভৃতি গ্রন্থে বাতব্যাধির চিকিৎসায় তেলের ব্যবহারের বিষয়ে সুস্পষ্ট নিদান দেওয়া আছে।
নিচে কয়েকটি তেল ব্যবহারের উল্লেখ করা হচ্ছে।
বলা তেলঃ বেড়েলা গাছের মুল, বেল, অগ্নিমন্থা, পাটলা, সন্যাক, গাম্ভারি, কণ্টিকারি, শালপর্ণী, যব ইত্যাদির মিশ্রণে এই তেল তৈরি করা হয়। যা প্রায় সবধরনের বাতের রোগে ফলদায়ক।
পুষ্পরাজ প্রশারনী তেলঃ গাঁদাল পাতার সঙ্গে অশ্বগন্ধা, শতাবরী, মৌরি, ছোটো পিপুল, জটামাংশী, মহিষের দুধ ও তিল তেলের মিশ্রণে এই তেল তৈরি হয়।
রসুন তেলঃ রসুনের রস ও তিল তেলের মিশ্রণে তৈরি এই তেল বেদনা স্থানে প্রয়োগে দ্রুত নিরাময় লাভ হয়।
অশ্বগন্ধা তেলঃ তিল তেল,পদ্মফুল,পদ্মফুলের কাণ্ড, পুনর্নবা প্রভৃতি ভেষজের তৈরি তেল মাংশপেশির শক্তি বৃদ্ধিতে ফলদায়ক।
লঘু পঞ্চমুল তেলঃ লঘু পঞ্চমুল, গোক্ষুর, শালপর্নী,পৃশ্নিপর্নী সংযোগে তৈরি তেল বাতব্যাধিতে ফলদায়ক।
চিঞ্চাদি তেলঃ তেঁতুলের মণ্ড, এরন্ড, বরুন গাছের ছাল প্রভৃতি ভেষজের মিশ্রণে তৈরি তেল বাতের রোগে খুব উপকারি।