আমরা আইনজীবী। পশ্চিমবঙ্গের আইনজীবী।ভারতবর্ষের আইনজীবী।
গর্ব হয় যে সংবিধানের ওপর সমগ্র দেশ আজ পরিচালিত, আমরা আইনজীবীরা সেই সংবিধান এর একজন পরিচালক ও পুজারী। আদালত কক্ষ আমাদের কাছে প্রার্থনা স্থল।
আমরা আইনজীবীরা দৈনিক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মকদ্দমা কারীদের হয়ে হাজির থাকি আদালত কক্ষে। শত সহস্র অভাব অভিযোগ এর মধ্যে দিয়ে অন্যান্য আইনজীবীদের সঙ্গে আইনি ও অন্যান্য আলোচনা করে সারাদিন কাটিয়ে দিই। মনে করিয়ে দেয় স্কুলের বন্ধুদের কথা। ব্যাতিক্রম শুধু আদালতে আমরা বরিষ্ঠ ও কনিষ্ঠ বন্ধু আইনজীবীদের পাই সাথী রূপে।
আমরা বেশিরভাগ সময় এই বরিষ্ঠ ও কনিষ্ঠ আইনজীবীদের সাথে নিজেদের সুখ দুঃখের আলোচনা করার সাথে সাথে আইনি আলোচনাও করে নিই। এই ভাবে বরিষ্ঠদের হাত ধরে চলতে চলতে , কনিষ্ঠদের শেখাতে শেখাতে এই পেশায় আমরা নিজেদের অভিজ্ঞতা তরান্বিত করি। জ্বর, জ্বালা, আপদ বিপদ উপেক্ষা করে এটাই আইনজীবীদের রোজনামচা।
সারা ভারতবর্ষ জুড়ে এই পেশায় নিযুক্ত সমস্ত আইনজীবী ও তাদের সহযোগী কর্মচারীরা যে নিয়মানুবর্তিতা নিয়ে সংবিধানের প্রতিটি শব্দের সঠিক পর্যালোচনা করে বাদি বা বিবাদি পক্ষের হয়ে আদালতে হাজির হয় ন্যায় বিচারের জন্য। আদালতে এক আইনজীবী আর এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে সংবিধান ও আইনের পাতায় পাতায় লেখা শব্দ, বাক্যের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণে একপক্ষ জয়লাভ করে। আবার লড়াই শেষে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক। কিন্তু কালের পরিহাসে কিছু ঔদ্বত্যপূর্ণ, ব্যাভিচার, পুলিশ অফিসারের বদান্যতায় আজ আইনজীবীদের, সহযোগী কর্মচারীদের ও বিচারপতি মহাশয়দের সকলের ওষ্ঠাগত প্রান।
হঠাৎ করে ঐ সমস্ত পুলিশ গুন্ডাদের ঔদ্বত্যপূর্ণ আচরনের প্রতিটি মূহুর্ত আজ ক্যামেরা বন্দি। ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। চারিদিকে উঠেছে তিরস্কারের কলরব। আইনজীবীদের ওপর নির্মমভাবে ও বর্বরতার সঙ্গে পাশবিক অত্যাচার করলো। মহিলা আইনজীবীদের কুরুচিপূর্ণ ভাষায় গালিগালাজ এমনকি বরিষ্ঠ আইনজীবীদেরকেও রেহাই দিল না। এরা কারা? কিসের এই ঔদ্ধত্য, কোথা থেকে আসে এদের এই পৈশাচিক ও দানবিক মানসিকতা ? এরাই কি আদালতে অপরাধী ধরে নিয়ে আসে? এরা তো নিজেরাই দাগী আসামী। তবু রাজনৈতিক মদতপুষ্ট এই পুলিশ গুন্ডাদের সরকারি কোষাগার ( জনসাধারণের কর বাবদ প্রদেয় অর্থ) থেকে মাসিক মাহিনা দিয়ে আমরা জনগনের রক্ষাকর্তা করে রেখেছি। এরা রাজনৈতিক মোড়কে মোড়া একদল হিংস্র জানোয়ার ছাড়া আর কিছুই নয়।
এরা রাজনৈতিক নেতাদের অপদার্থতা ঢাকতে ব্যস্ত, আর ব্যস্ত রাজনৈতিক নেতাদের তাবেদারী করতে। এদের না আছে মানবিকতা, না বিবেক বোধ, মান ও সন্মান। এদেরকে সমাজের বাইরে কোনো বদ্ধ ঘরে বন্ধ করে রাখা হোক। যাতে সূর্যের আলোও ওরা না পায়। এরাই অপরাধী তৈরী করে।
সর্বশেষ একটি কথাই বলবো এরা সমাজের কুলাঙ্গার। সমাজকে ঠিক করতে গেলে এদেরকে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী ঘুমিয়ে আছেন মাটিতে, মায়ের ডাক তার কানে পৌঁছচ্ছেনা, তিনি যে এখন আজ মানুষ নন, তিনি দানব। দুঃখ লাগে আইনজীবী অরূপ রায়ের জন্য, একবার উনি ভাবেন উনি মন্ত্রী, উনি আসলে একজন রাজনৈতিক নেতা । রঙ্গিন রঙ্গিন স্বপ্ন আজ ওনাকে সাদা কালো রঙ্গের গুরুত্ব উপলব্ধি করতে দিচ্ছে না।
গত ২৪/০৪/২০১৯ থেকে যে আওয়াজ আইনজীবীরা তৈরী করেছেন , সেই আওয়াজ আপনার শ্রবণ শক্তিকে নষ্ট করে দেবে। তার আগে আপনি পালান। পালাতে না পারলে আপনি আপনার বার কাউন্সিলের রেজিস্ট্রেশন ফেরত করুন। সাহস থাকলে আপনি আপনার আইনজীবী স্বত্তা ত্যাগ করুন। আপনার এত স্পর্ধা যে আপনি জনগনের অর্থপুষ্ট পুলিশকে কুকুরের মত, হিংস্র জানোয়ারের মতো আইনজীবীদের ওপর লেলিয়ে দেন!! আইনজীবী হিসেবে পুলিশকে আপনার শিক্ষা দেওয়া উচিত ছিল, তাদের গ্রেপ্তার না করে , আপনি আইনজীবীদের ওপরই দোষ চাপিয়ে দিলেন!! এত ধৃষ্টতা আসে কোত্থেকে। সন্মান জানিয়ে আইনজীবী স্বর্গীয় প্রভাত রায় মহাশয়কে জানাই যে আপনার সন্তানের জন্য আপনার মান সন্মান নষ্ট হতে দেবোনা, আমরাই আমাদের রাজনৈতিক বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে আপনার ও আইনজীবীদের মান বজায় রাখবো। কিছুই বলার নেই পুলিশ মন্ত্রীকে । এখনও পর্যন্ত শুধু এই পুলিশই ওনার সাথে আছেন আর উনি আছেন পুলিশের সাথে। সে সিবিআই থেকে বাঁচতে ও বাঁচাতে দুটো ক্ষেত্রেই। ওনার কাছে সময়ের ভীষন অভাব তাই হাওড়া কোর্টে আইনজীবীদের ওপর পাশবিক হামলা ওনার মনে দাগ কাটে না। ওনার দলে আজ “মা” হারানোর কান্না, “মাটি” আজ শুকিয়ে “পাথর”, “মানুষ” কে উনি “অমানুষ” তৈরী করছেন শুধু রাজনৈতিক কাজে লাগানোর জন্য। তোমার জয়ধ্বনি বাংলা নয়, ভারতে নয়, ঐ “নরকে” হোক। ও হো একদম ভূলে গিয়েছিলাম মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী ও পুলিশ মন্ত্রীও নাকি গর্ব করেন উনি আইনজীবী বলে।
ধিক তোমায় ধিক।