আগামীর ইতিহাস বলবে নদী কিভাবে প্রতিশোধ নেবে। আগামী প্রজন্ম আঙুল তুলবেই আমাদের প্রজন্মের দিকে। তারাপীঠে যেমন খরুন ও সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে দ্বারকানন্দ সংস্কারের কাজে হাত দেওয়া হয়েছে জেলা শাসক পি.মোহন গান্ধীর তত্বাবধানে, সেই ভাবেই অজয় সংস্কারেও অনতি-বিলম্বে হতক্ষেপ প্রয়োজন। জয়দেব মেলেকে কেন্দ্র করে এখানে যে সংখ্যায় অস্থায়ী আখড়া, আশ্রম ইত্যাদি গড়ে ওঠে, সেই অনুপাতে শৌচালয়ের সংখ্যা প্রায় হাতে গোনা। বিশেষ করে মহিলাদের দুর্দশা চরমে ওঠে। নদী তীরবর্তী উঁচু বাঁধ বরাবর রাস্তা আখড়া গুলোর আশে পাশে যত্রতত্র গজিয়ে ওঠে শৌচালয়। ফলে দুর্গন্ধে টেকা দায় হয়ে পড়ে। আলোর অপ্রতুলতা থাকায় ভক্ত পথচারীদের হাল অত্যন্ত করুন হয়ে পড়ে। যদি প্রশাসনের নজরে পড়ে, আগামীদিনে এই সমস্যাগুলো হয়ত মিটবে।
জয়দেব মন্দিরের চিত্রটি আরও বিবর্ণ। সংস্কার ও উপযুক্ত সংরক্ষণের অভাবে মন্দিরগাত্রের টেরাকোটার অপূর্ব কারুকার্য ক্রমশ খসে পড়ছে। তার বদলে জায়গা নিচ্ছে নিখুঁত, পরিপাটি করে সিমেন্টের আস্তরন। মৌলিকত্ব আজ মলিন। অযত্নের ছাপ সর্বত্র, এর চারপাশে উপযুক্ত প্রহরারও প্রয়োজন। বিশেষ করে মেলা উপলক্ষে যে কাঁচা কাঠের জ্বালানী ব্যবহার করা হয়, মন্দির সংলগ্ন খাবার দাবারের দোকানগুলোয় তাদের ধোঁয়ায় মন্দির গাত্রের স্বাভাবিক রঙও উজ্জ্বল্যে কালিলেপন করে।
সম্প্রতি (২০১৫) কেদুলিতে পয়লা মাঘকে ‘গীতগোবিন্দের’ রচনার শুরুর দিন হিসেবে পালন করার এক প্রয়াস শুরু হয়েছে। যদিও এই উদ্যোগটি নতুন নয়। প্রায় ধু দশকেরও বেশি সময় ধরে এই কাজটি অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করা হয়ে আসছে জয়দেব অঞ্চল সংস্কৃতি সেরা সমিতি। গতবছর তাঁরা কেদুলির বিখ্যাত বাউলদের ছবি ও সংক্ষিপ্ত পরিচয় সহ একটি সংগ্রহশালার উদ্বোধন করেন। এখানে গেলে বীরভুম বা অন্যান্য জায়গা থেকে প্রকাশিত জয়দেব, কেদুলি, বাউল, গীতগোবিন্দ সংক্রান্ত অজস্র লেখা ও পত্র পত্রিকার সন্ধান পাওয়া যাবে।